লাইলাতুল কদর (শবে কদর)
রমযান মাসের
রজনীসমূহের মধ্যে অতীব
গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময়
রজনী হল লাইলাতুল
কদর।
রমযান মাসের মাহাত্ম্য
ও
গুরুত্ব এ রজনীর
কারণে বহুগুণ বেড়ে
গেছে।
শবে কদরের নামকরণ
শব ফারসী শব্দ, যার অর্থ রাত। রাতকে আরবীতে ليل (লাইল) বলে। তাই কুরআন ও হাদীসে এ রাতকে ليلة القدر (লাইলাতুল কদর) বলা হয়েছে। অর্থাৎ কদরের রাত। قدر (কদর) শব্দের দুটি অর্থ হতে পারে : ক. মাহাত্ম্য, সম্মান ও মর্যাদা। এক্ষেত্রে লাইলাতুল কদরের অর্থ হবে সম্মানিত, মহিমান্বিত বা মর্যাদাশীল রজনী। খ. কদর শব্দের দ্বিতীয় অর্থ তাকদীর। অর্থাৎ ভাগ্য। যেহেতু এ রাতেই পরবর্তী এক বছরের বিস্তারিত অবধারিত বিধিলিপি সংশ্লিষ্ট ফেরেশতাগণের কাছে হস্তান্তর করা হয়, সে বিধিলিপিতে মানুষের জন্ম, মৃত্যু ও রিযিক ইত্যাদির পরিমাণ নির্দিষ্টভাবে ফেরেশতাদেরকে লিখে দেওয়া হয় তাই এদিকে লক্ষ্য করেও এ রাতকে আরবীতে লাইলাতুল কদর এবং ফারসীতে শবে কদর তথা ভাগ্য-রজনী বলা হয়।-লুগাতুল কুরআন ৫/৮২; তাফসীরে কুরতুবী ১০/৮৮-৮৯
হযরত ইবনে আববাস রা., হযরত ইবনে উমর রা., মুজাহিদ রাহ. ও যাহহাক রাহ. প্রমুখ সালাফে সালেহীনের এক জামাত এ মত পোষণ করেছেন যে, শবে কদরে সৃষ্টি সম্পর্কিত সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ফয়সালা (লাওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ ফয়সালা অনুসারে ফেরেশতাদেরকে) জানানো হয় যা পরবর্তী শবে কদর পর্যন্ত এক বছরে সংঘটিত হবে। যেমন-এ বছর কারা কারা জন্মগ্রহণ করবে, কে কে মারা যাবে এবং এ বছর কী পরিমাণ রিযিক দেওয়া হবে ইত্যাদি।-তাফসীরে ইবনে কাসীর ৪/১৪৫; তাফসীরে কুরতুবী ১৬/৮৫
শবে কদরের এ বিশেষত্বের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে সূরা দুখানের ৪র্থ আয়াতে।
কোন রজনীটি শবে কদর
আল্লাহ তাআলা শবে কদরের তারিখ গোপন রেখেছেন। তবে বরকতপূর্ণ মহিমান্বিত সে রজনী যে রমযান মাসেই তা কুরআন ও হাদীসে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখিত হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآَنُ
(তরজমা) রমযান মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কুরআন।-সূরা বাকারা (২) : ১৮৫
অন্য এক আয়াতে আরো ইরশাদ হয়েছে-
انا انزلناه فى ليلة القدر
(তরজমা) নিঃসন্দেহে আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি শবে কদরে।-সূরা কদর (৯৭) : ১
এ দু আয়াতকে সমন্বয় করলে প্রতীয়মান হয় যে, শবে কদর রমযান মাসেই আছে।-তাফসীরে কুরতুবী ২/১৯৯
হাদীস শরীফে আছে-
শবে কদরের নামকরণ
শব ফারসী শব্দ, যার অর্থ রাত। রাতকে আরবীতে ليل (লাইল) বলে। তাই কুরআন ও হাদীসে এ রাতকে ليلة القدر (লাইলাতুল কদর) বলা হয়েছে। অর্থাৎ কদরের রাত। قدر (কদর) শব্দের দুটি অর্থ হতে পারে : ক. মাহাত্ম্য, সম্মান ও মর্যাদা। এক্ষেত্রে লাইলাতুল কদরের অর্থ হবে সম্মানিত, মহিমান্বিত বা মর্যাদাশীল রজনী। খ. কদর শব্দের দ্বিতীয় অর্থ তাকদীর। অর্থাৎ ভাগ্য। যেহেতু এ রাতেই পরবর্তী এক বছরের বিস্তারিত অবধারিত বিধিলিপি সংশ্লিষ্ট ফেরেশতাগণের কাছে হস্তান্তর করা হয়, সে বিধিলিপিতে মানুষের জন্ম, মৃত্যু ও রিযিক ইত্যাদির পরিমাণ নির্দিষ্টভাবে ফেরেশতাদেরকে লিখে দেওয়া হয় তাই এদিকে লক্ষ্য করেও এ রাতকে আরবীতে লাইলাতুল কদর এবং ফারসীতে শবে কদর তথা ভাগ্য-রজনী বলা হয়।-লুগাতুল কুরআন ৫/৮২; তাফসীরে কুরতুবী ১০/৮৮-৮৯
হযরত ইবনে আববাস রা., হযরত ইবনে উমর রা., মুজাহিদ রাহ. ও যাহহাক রাহ. প্রমুখ সালাফে সালেহীনের এক জামাত এ মত পোষণ করেছেন যে, শবে কদরে সৃষ্টি সম্পর্কিত সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ফয়সালা (লাওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ ফয়সালা অনুসারে ফেরেশতাদেরকে) জানানো হয় যা পরবর্তী শবে কদর পর্যন্ত এক বছরে সংঘটিত হবে। যেমন-এ বছর কারা কারা জন্মগ্রহণ করবে, কে কে মারা যাবে এবং এ বছর কী পরিমাণ রিযিক দেওয়া হবে ইত্যাদি।-তাফসীরে ইবনে কাসীর ৪/১৪৫; তাফসীরে কুরতুবী ১৬/৮৫
শবে কদরের এ বিশেষত্বের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে সূরা দুখানের ৪র্থ আয়াতে।
কোন রজনীটি শবে কদর
আল্লাহ তাআলা শবে কদরের তারিখ গোপন রেখেছেন। তবে বরকতপূর্ণ মহিমান্বিত সে রজনী যে রমযান মাসেই তা কুরআন ও হাদীসে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখিত হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآَنُ
(তরজমা) রমযান মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কুরআন।-সূরা বাকারা (২) : ১৮৫
অন্য এক আয়াতে আরো ইরশাদ হয়েছে-
انا انزلناه فى ليلة القدر
(তরজমা) নিঃসন্দেহে আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি শবে কদরে।-সূরা কদর (৯৭) : ১
এ দু আয়াতকে সমন্বয় করলে প্রতীয়মান হয় যে, শবে কদর রমযান মাসেই আছে।-তাফসীরে কুরতুবী ২/১৯৯
হাদীস শরীফে আছে-
عن عبادة بن الصامت أنه قال : يا رسول
الله! أخبرنا عن ليلة القدر؟ فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم : هي في رمضان.
হযরত উবাদা ইবনে সামেত রা. রাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট শবে কদর সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি ইরশাদ করেন-শবে কদর তো রমযানেই।-মুসনাদে আহমদ ৫/২৩১, হাদীস : ২২২৩৫
তাই রমযানের শুরু থেকেই শবে কদরের অন্বেষণে তৎপর থাকতে হবে। এছাড়া হাদীস শরীফে শবে কদরকে বিশেষভাবে শেষ দশকের রাতে খুঁজতে বলা হয়েছে।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
تحروا ليلة القدر في العشر الأواخر من رمضان.
রমযানের শেষ দশকে শবে কদরকে তালাশ কর।-সহীহ বুখারী ১/২৭০, হাদীস : ২০১৭
এখানে অনুসন্ধান বা খোঁজ করার অর্থ হচ্ছে এ রাতগুলোকে ইবাদত-বন্দেগী ও তওবা-ইস্তিগফারের মধ্যে কাটানো। শেষ দশকের সব রাতে যদি শবে কদর তালাশ করা এবং ইবাদত-বন্দেগী করা সম্ভব না হয় তাহলে অন্তত শেষ সাত দিনে অবশ্যই তালাশ করতে হবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
التمسوها في العشر الأواخر، فإن ضعف أحدكم أو عجز فلا يغلبن على السبع البواقي.
তোমরা রমযানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর তালাশ কর। তোমাদের কেউ দুর্বল কিংবা (পূর্ণ দশ দিন রাত্রিজাগরণে) অক্ষম হলে অবশিষ্ট সাত রাতের বিষয়ে কোনোভাবেই যেন পরাস্ত না হয়।
সহীহ বুখারীর এক বর্ণনায় এসেছে-
تحروا ليلة القدر في الوتر من العشر الأواخر من رمضان.
শবে কদরকে তোমরা রমযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে অন্বেষণ কর।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ২০১৭
অর্থাৎ রমযানের ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ও ২৯ তারিখের রাতগুলোতে। (উল্লেখ্য, চাঁদের হিসাবে রাত আগে আসে, দিন পরে আসে।)
সুতরাং বুঝা গেল যে, শেষ দশ দিনের যে কোনো রাতেই শবে কদর হতে পারে। তবে এর মধ্যে বেজোড় রাতগুলোর উপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কেননা এগুলোর মধ্যে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
এ আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, ২৭-এর রাত শবে কদর হওয়া অনিবার্য নয়; বরং ২১, ২৩, ২৫ ও ২৯ রমযানের যে কোনো রাতই শবে কদর হতে পারে। হ্যাঁ, ২৭ রমযানের রাতের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এ রাতের বিষয়ে হাদীসে ভিন্নভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যারা শেষ দশকের সবকটি রাতে ইবাদত-বন্দেগী করতে একেবারেই অপারগ, তাদের অন্তত সাতাশের রাতের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। হযরত ইবনে আববাস রা. হতে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে এসে আরজ করল, হে রাসূল! আমি একজন বৃদ্ধ রুগ্ন ব্যক্তি। রাতে নামাযে দাঁড়াতে আমার অসহ্য কষ্ট হয়। তাই আপনি এমন একটি রাতের কথা বলে দিন, যে রাতে আমি শবে কদর পেতে পারি। তখন তিনি ইরশাদ করেন, তুমি সাতাশের রাতের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দাও।-মুসনাদে আহমদ ১/২৪০, হাদীস : ২১৫০
সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, হযরত উবাই ইবনে কাব রা. শবে কদর সম্পর্কে বলেন-
إني لأعلمها ... هي ليلة سبع وعشرين.
শবে কদর কোন্ রাত তা আমি অবশ্যই জানি। সেটি হল সাতাশের রাত।-সহীহ মুসলিম ১/৩৭১, হাদীস : ১১৬৯/২২১
অতএব রমযানের শেষ দশকে ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে শবে কদর অনুসন্ধান করতে হবে। তা সম্ভব না হলে শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে তালাশ করতে হবে। যারা রুগ্ন কিংবা অন্যান্য রাতে সযত্নে কাটানোর সুযোগ হয়নি তাদের অন্তত সাতাশের রাতের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
শবে কদরের ফযীলত
এ রাতের মাহাত্ম ও মর্যাদা অনুধাবনের জন্য এটাই যথেষ্ট যে, এ রাতের ফযীলত সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআন মজীদে সূরা কদর নামে একটি স্বতন্ত্র সূরাই অবতীর্ণ করেছেন।
ইরশাদ হয়েছে-
انا انزلناه فى ليلة القدر، وما ادرك
ما ليلة القدر، ليلة القدر خير من الف شهر تنزل الملائكة والروح فيها باذن ربهم من
كل امر سلام هى حتى مطلع الفجر.
(তরজমা) নিঃসন্দেহে কদরের রাতে আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি। আর আপনি কি জানেন শবে কদর কী? শবে কদর হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। এ রাতে ফেরেশতা ও রুহুল কুদস (জিবরীল আ.) তাদের পালনকর্তার আদেশে প্রত্যেক মঙ্গলময় বস্ত্ত নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন। (এ রাতের) আগাগোড়া শান্তি, যা সুবহে সাদিক হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।-সূরা কদর (৯৭)
পুরো সূরাটিই লাইলাতুল কদর সম্পর্কে, এতে শবে কদরের মোট চারটি বৈশিষ্ট্য বলা হয়েছে।
১. এ রাতে আল্লাহ তাআলা কুরআন মজীদ অবতীর্ণ করেছেন। অর্থাৎ এ রাতে কুরআন মজীদ অবতরণের ধারাবাহিকতা শুরু হয়, যা পূর্ণ হয় সুদীর্ঘ তেইশ বছরে। এছাড়া ইবনে আববাস রা.সহ একাধিক সাহাবী ও তাবেয়ী বলেছেন, এ রাতে কুরআন মজীদ পুরোটাই লওহে মাহফুয থেকে প্রথম আসমানের বাইতুল ইযযতে অবতীর্ণ হয়েছে। অতপর তেইশ বছর ধরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর তা অবতীর্ণ হয়।-তাফসীরে কুরতুবী ২/৮৮; তাফসীরে ইবনে কাসীর ১/২৩০
২. শবে কদর হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। এক হাজার মাসে তিরাশি বছর চার মাস হয়। অনেকের মতে, এখানে হাজার মাস বলে নির্ধারিত সংখ্যা বুঝানো হয়নি; বরং অত্যধিক ও অসংখ্য ফযীলত বুঝানোর জন্য এভাবে বলা হয়েছে। এমন বরকতময় রাতে যে ব্যক্তি ইবাদত-বন্দেগী করার সুযোগ পেল সে কতইনা সৌভাগ্যবান! একাধিক মুফাসসির বলেন, যে ব্যক্তি এ রাতে ইবাদত করল বাস্তবে যদিও সে মাত্র একটি রাত ইবাদত করল, কিন্তু এর দ্বারাই সে তিরাশি বছর চার মাসেরও বেশি সময় ইবাদতে লিপ্ত থাকার সাওয়াব হাসিল করল।-তাফসীরে ইবনে কাসীর ৪/৫৬৩-৫৬৪; তাফসীরে কুরতুবী ২০/৮৯
যে উম্মতের গড় আয়ু মাত্র ৬০-৭০ বছর, তাদের জন্য এমন একটি রাত পাওয়া কতই না সৌভাগ্যের বিষয়!
৩. এ রজনী জিবরীল আ. ও ফেরেশতাদের দলসমূহ আল্লাহ তাআলার নির্দেশে প্রত্যেক মঙ্গলময় বস্ত্ত নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন।
৪. কদরের পুরো রাতই একটি শান্তিময় রজনী।
* উপরন্তু সহীহ বুখারীর হাদীসে এ রাত সম্পর্কে বলা হয়েছে-
من قام ليلة القدر إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه.
যে ব্যক্তি বিশ্বাস স্থাপন করত সওয়াবের উদ্দেশ্যে এ রাতে (নফল) নামায পড়বে, তার পিছনের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।-সহীহ বুখারী ১/২৭০, হাদীস : ২০১৪
অন্য এক হাদীসে আছে-
إن هذا الشهر قد حضركم وفيه ليلة خير
من ألف شهر، من حرمها فقد حرم الخير كله، ولا يحرم خيرها إلا محروم.
তোমাদের মাঝে এ মাস সমাগত। এতে এমন একটি রাত আছে, যা হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। যে ব্যক্তি এ রাত থেকে বঞ্চিত হবে, সে সর্বপ্রকার খায়র ও বরকত থেকে বঞ্চিত হবে। বস্ত্তত একমাত্র হতভাগ্য ও বঞ্চিত ব্যক্তিই এ রাতের মঙ্গল থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকে।-সুনানে ইবনে মাজাহ ১১৯, হাদীস : ১৬৪৪
শবে কদরের করণীয়
খোদাপ্রেমিক বান্দাগণ পুরো বছর ধরে রমযানের এ রাতটির প্রতীক্ষায় প্রহর গুণতে থাকেন। যখন সে রাত তাদের সামনে সমাগত হয় তখন তাঁরা তাকে পূর্ণ মর্যাদার সাথে বরণ করেন।
হাদীস শরীফে আছে-
عن عائشة رضي الله عنها قالت : كان
رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا دخل العشر أحيا الليل وأيقظ أهله وجد وشد
المئزر.
হযরত আয়েশা রা. বলেন, রমযানের শেষ দশ দশক আসার সাথে সাথেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে রাত জাগতেন এবং পরিবারবর্গকেও জাগিয়ে দিতেন। ইবাদতের মধ্যে নিতান্ত পরিশ্রম করতেন এবং মজবুত করে লুঙ্গি বেঁধে নিতেন অর্থাৎ কোমর বেঁধে ইবাদতে আত্মনিয়োগ করতেন।-সহীহ মুসলিম ১/৩৭২, হাদীস : ১১৭৪
নিম্নে এ রাতের করণীয়গুলো সংক্ষেপে দেওয়া হল।
১. অন্যান্য সময়ের মতো এ রাতের ইশা ও ফজর মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করা।
হাদীস শরীফে আছে-
من صلى العشاء في جماعة فكأنما قام
نصف الليل، ومن صلى الصبح في جماعة فكأنما صلى الليل كله.
যে ব্যক্তি ইশার নামায জামাতের সাথে আদায় করল সে যেন অর্ধেক রাত জাগ্রত থেকে নামায পড়ল। আর যে ফজরের নামায জামাতের সাথে আদায় করল সে যেন সারা রাত নামায পড়ল।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৬৫৬/২৬০
২. নফল নামায এবং তাহাজ্জুদ ও যিকির-আযকার করা। কুরআন তিলাওয়া করা। কেননা হাদীস শরীফে এসেছে-
من قام ليلة القدر إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه
অর্থ : যে ব্যক্তি কদরের রাতে ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে রাত অতিবাহিত করবে তার জীবনের কৃত পাপসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে।-সহীহ বুখারী ১/২৭০, হাদীস : ২০১৪
উল্লেখ্য, এ রাতের নফল নামাযের কোনো সংখ্যা নির্ধারিত নেই। তেমনি কোনো নির্দিষ্ট সূরা দিয়ে নামায পড়ার বিধান ও ফযীলত নেই। তবে তাহাজ্জুদের নামাযের কিছু সাধারণ আদব রয়েছে, যেগুলোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। বিশেষ করে শবে কদরের মুবারক রাতের তাহাজ্জুদে নিম্নোক্ত আদবের প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা চাই।
ক. লম্বা কিরাতে নামায আদায় করা।
হাদীস শরীফে এসেছে-
كان النبي صلى الله عليه وسلم ليقوم حتى ترم قدماه.
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এত অধিক পরিমাণে দাঁড়িয়ে থাকতেন যে, তাঁর পা মুবারক ফুলে যেত।-সহীহ বুখারী ১/১৫২, হাদীস : ১১৩০
খ. ধীরে ধীরে তারতীলের সাথে কুরআন পাঠ করা এবং অর্থের দিকে লক্ষ্য করা।
গ. কিরাতের মাঝে রহমতের আয়াত এলে রহমতের দুআ করা, মাগফিরাতের আয়াত এলে মাগফিরাতের দুআ করা এবং কোনো আযাব-গজব বা হুঁশিয়ারি উচ্চারিত হলে তা থেকে পানাহ চাওয়া ও বেশি বেশি মাগফিরাতের দুআ করা।
জামে তিরমিযীতে (২/১৯১, হাদীস : ৩৫১৩) বর্ণিত একটি সহীহ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আম্মাজান হযরত আয়েশা রা.কে শবে কদরে নিম্নোক্ত শব্দে দুআ করতে নির্দেশ দিয়েছেন-
اَللّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ كَرِيْمٌ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّيْ.
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন কারীম, তুহিববুল আফওয়া ফা’ফু আন্নী।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, দয়ালু। ক্ষমা করতে পছন্দ করেন। সতুরাং আমাকে ক্ষমা করে দিন।
Merkur 37C Safety Razor Review – Merkur 37C
ReplyDeleteThe Merkur 37c is an excellent short handled DE safety razor. It is more suitable for kadangpintar both heavy herzamanindir.com/ and non-slip hands titanium metal trim and is therefore a nba매니아 great option for experienced https://deccasino.com/review/merit-casino/